• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

স্মৃতি বড় বেদনাতুর 


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৫ আগষ্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৫০ পিএম;
স্মৃতি বড় বেদনাতুর 
স্মৃতি বড় বেদনাতুর 

স্মৃতি বড় বেদনাতুর .

মিজানুর রহমান মিজান .

গতকাল থেকে ফেইসবুকে একটি সংবাদ দেখে,“উত্তর বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের অব: প্রধান শিক্ষক মরহুম আব্দুল ওয়াহিদ স্মরণে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও খতমে কোরান অনুষ্ঠান পালন করা হয় মুষ্টিমেয় ক’জন প্রাক্তন ছাত্রদের মাধ্যমে”। অনুষ্ঠান আয়োজকদের ধন্যবাদ, অকৃত্রিম ভালবাসা ও মোবারকবাদ জানাই আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে।যারা তাদের মেধা, শ্রম, অর্থ দিয়ে অনুষ্ঠানকে সার্থক ও সফল করে তুলেছেন এবং শুরু যখন হয়েছে, তখন আরো হবে বা হবার আশার আলোর ঝিলিক দৃষ্ট হচ্ছে।বীজ বপন বা রোপন করা হলে সঠিক পরিচর্যা, যত্ন নিলে ডাল-পালাসহ ফুল ও ফলে পরিপূ্র্ণতার মাধ্যমে উৎকৃষ্ট গাছে রুপান্তরিত হবে অবশ্যই।যদিও তা হয়েছে একটু বিলম্বে। নদীর স্রোত থাকে বহমান বা চলমান।হঠাৎ করে যদি কেহ বাঁধ সৃষ্টি করে, তবে তা ধরে রাখা যায় না বা অত্যন্ত কঠিন বিষয়।ফুলে ফেপে উথলিয়ে উঠে।চারিদিক প্লাবিত করে স্রোত সকল বাঁধ ভেঙ্গে নিয়ে চলে যায়।তদ্রুপ আমার মনে হয় যাত্রা হয়েছে শুরু।কিন্তু দৃষ্টি কটু লেগেছে অপরাপর সংবাদে, যা নিন্দনীয়।আমি এক নগণ্য এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্র ও অল্পদিন শিক্ষক রুপে ছিলাম স্কুলে কর্মরত।তখন প্রধান শিক্ষক রুপে এসেছিলেন এলাকার আরেক জ্ঞানী, গুণীজন প্রধান শিক্ষক রুপে আমার পরম শ্রদ্ধা ভাজন শিক্ষক জনাব মুহিবুর রহমান কিরন স্যার হাজারী গাঁও।যিনি কোলকাতার রবীন্দ্র-ভারতী-বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের রিডারনির্মল দাশের অধীনে ‘সিলেটী উপভাষার ভাষা তাত্ত্বিক সমাক তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ বিষয়ে গবেষণা কর্মে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তা ছেড়ে দিয়েছিলেন এলাকার উন্নয়ন চিন্তা করে।আমি কয়েকদিন আগে স্যারের একটি লেখা ফেইসবুকে দেখে তিনির আক্ষেপ ও হতাশার ইঙ্গিত পেয়েছি এবং যে আক্ষেপ নিয়ে আমিও জীবন যাপন করছি। তাহলে এখানে স্যারের কথা বা লেখা এখানে উল্লেখ করতেই হয়্ সরাসরি। স্যার লিখেছেন উত্তর বিশ্বনাথ স্কুলকে নিয়ে। যেখানে আমি ছিলাম ওৎপ্রোত ভাবে জড়িত।দেখুন স্যারের কথা বা লেখা,“আমিও তো এক সময় গ্রামের মানুষের জন্য কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম। ভবিষ্যতের চিন্তা না করে গ্রামে গ্রামে মাসের পর মাস ঘুরেছি।নাঅর্থ বিত্তের জন্যনয়নির্বাচনে দাঁড়াবার জন্যও নয়। শুধু এলাকার মানুষকেছেলে মেয়ে দেরকে শিক্ষিত করে তোলার জন্যআমি একটু আলোতে এসেই বুঝে ছিলাম অন্ধকার কত ভয়াবহকতো অভিশপ্ত। দিনরাত পরিশ্রম করেস্কুল গড়ারপাঠাগার প্রতিষ্ঠার,ম্যাগাজিন.

সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করার আপ্রাণ চেষ্টায় নিয়োজিত থেকেছি। কিছু উৎসাহী  নিঃস্বার্থ যুবককে সাথে পেয়েছি। অথচ তেমন কিছুকরতে পারিনি।বুঝেছি এক কোকিল ডাকলেই বসন্ত আসবেনাতার জন্যবহু কোকিলের সম্মিলিত ডাক প্রয়োজন”। উত্তর বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম ম্যাগাজিন প্রকাশ, গানের অনুষ্ঠান করে টাকা সংগ্রহ এ সময়ই হয়েছে। স্যারের সাথে ছিলাম সর্বক্ষণ জড়িত।অনেক শিক্ষক তাঁদের অনেক সুযোগ সুবিধা থাকা সত্তেও শুধু মাত্র এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবার মন মানসিকতা ধারণ করে দিবারাত্রি কঠোর পরিশ্রম ও মেধা ব্যয় করে আজকের অবস্থানে আনা হয়েছে।  .

উত্তর বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয় যে সব কীর্তিমান পুরুষের পরশ পেয়ে হয়েছে গৌরবের উচ্চাসনে সমাসীন, যাদের বুকে ধারন করার গৌরব অর্জন করে হয়েছে সুখ্যাতির চন্দন তিলক সিক্ত, অবৈতনিক শিক্ষক রুপে মেধা, শ্রম দিয়ে নিজ কাঁদে তুলে বাঁশ বহন করেছেন, ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি হানা দিয়েছেন, ১৯৭৬ সালে সার্কাস এনে আয় করে টাকা সংগ্রহ করেছেন, গানের অনুষ্ঠান করে অর্জিত বা আয়কৃত টাকা দিয়ে প্রথম ইট সমৃদ্ধ ঘর নির্মাণ করেছেন,যাঁরা বিশ্বনাথ-সিলেট শহরে গিয়ে অনুদান এনেছেন উপোস, অর্ধাহারী থেকে শ্রম দিয়েছেন, সেই সব শিক্ষক ও এলাকার মুরব্বিয়ান, তরুনদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।যাঁদের অবদান খাটো বা ছোট করে দেখার মোটেই অবকাশ নেই। তাঁদের মধ্যে অনেকে আজ এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন না ফেরার দেশে। যেমন প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মরহুম আখতার হোসেন হাজারী গাঁও,সাবেক প্রধান শিক্ষক মরহুম আলতাফুর রহমান ছাদ মিয়া ঘাসি গাঁও, মরহুম উকিল আলী হাজারী গাঁও, সাবেক প্রধান শিক্ষক মরহুম নওরোজ আলী হাজারী গাঁও, মরহুম মাওলানা আব্দুল করিম, সাবেক প্রধান শিক্ষক(অব:)মরহুম আব্দুল ওয়াহিদ খাজাঞ্চী গাঁও প্রমুখ। এ সকল শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকদের মধ্যে আমাকে মরহুম উকিল আলী, মরহুম নওরোজ আলী ও মরহুম আলতাফুর রহমান ছাদ মিয়ার জানাজাতে শরিক হবার তওফিক মহান আল্লাহতায়ালা দিয়েছিলেন। লক্ষ্য করেছি এ সকল গুণী শিক্ষকদের জানাজাতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন লক্ষণীয় উদ্যোগ ছিল না। কেন এই উদাসীনতা, হীনমন্যতা,সংকীর্ন মন-মানসিকতার?মনে পড়ে, “যে এলাকা, সমাজ,জাতিতে গুণীজনদের সম্মান করে না, সে এলাকা,সমাজ, জাতিতে গুণীজন জন্মায় না”। মানুষকে সম্মান করলে আপনিও একদিন হবেন সম্মানিত।আমার প্রিয় স্কুলটি এগিয়ে যাক সম্মুখ পানে এ আমার মনের আকুতি, অকৃত্রিম ভালবাসার চাওয়া পাওয়া।আমি আমার অনেক লেখায় স্কুল নিয়ে লিখেছি। কেহ একটু খেয়াল করলেই পেয়ে যাবেন। ভবিষ্যতেও যদি বেঁচে থাকি তবে লেখার আশা রাখি।সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন এ মহামারী করোনার ছোবল থেকে সরকার কর্তৃক প্রণীত পুরোপুরি স্বাস্থ্য বিধি মেনে। .

.

ডে-নাইট-নিউজ / মিজানুর রহমান মিজান 

ইতিহাসের পাতা বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ